স্টাফ রিপোর্টার
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা শাহ আহমাদুল্লাহ আশরাফ বলেছেন, বর্তমান ধর্মনিরপেক্ষ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে ঘোষণা দিয়েছিল, কোরআন ও সুন্নাহবিরোধী কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে না। কিন্ু্ত ক্ষমতার গরমে তারা অতীতের সেই ওয়াদা বেমালুম ভুলে গিয়ে একের পর এক কোরআন, সুন্নাহ ও শরিয়তবিরোধী কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্বের ২য় বৃহত্তম মুসলিম দেশটাকে ইসলামশূন্য করার চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। জনগণের আবেদন-নিবেদন কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছে না সরকার। কী কারণে, কাদের স্বার্থে ও মনোরঞ্জনে, কোন দেশের সাহসে এটা করছে—তা আমাদের বোধগম্য নয়। তিনি বলেন, সরকার গুটিকয়েক রাম-বাম বাবুদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে বলে মনে হচ্ছে।
বর্তমান সরকারের দু’বছরের শাসনকালে যেসব কাণ্ড ঘটেছে, তাতে লজ্জায় মুখ থুবড়ে পড়ে। দেশ-বিদেশে সরকার ও জাতির মান-মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। সরকার ইসলাম ও দেশবিরোধী তত্পরতা বন্ধ না করলে দেশপ্রেমিক তৌহিদি জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।
গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আমিরের পক্ষে লিখিত বক্তব্যটি পাঠ করেন দলের মহাসচিব মাওলানা জাফরুল্লাহ খান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের নায়েবে আমির আল্লামা সোলায়মান নোমানি, আনিসুর রহমান জিন্নাহ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা মহানগর সভাপতি অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের মুফতি আবদুল আউয়াল ওয়াইসি, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের সাখাওয়াত হোসাইন প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে মাওলানা আশরাফ আরও বলেন, বর্তমান সরকার ধর্মনিরপেক্ষতার প্রবক্তা হলেও তাদের ধর্মনিরপেক্ষীয় সব হামলা ও সংস্কার শুধু ইসলাম ধর্মের ওপরই চলছে, এটা কেমন নিরপেক্ষতা? তিনি বলেন, কোনো মুসলমানের পক্ষে ধর্মনিরপেক্ষ হওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু রাষ্ট্রপতি ‘ফতোয়া’ বন্ধের হুমকি এবং প্রধানমন্ত্রী পবিত্র কোরআনের শাশ্বত বিধান পরিবর্তন করে উত্তরাধিকার আইনে মনগড়া সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। পবিত্র কোরআন, মহানবী (সা.), হাজরে আসওয়াদ ও কোরবানি নিয়ে কটূক্তিমূলক বক্তব্য, স্কুলের সাইনবোর্ড থেকে কোরআনের আয়াত মুছে ফেলা, সাংবাদিককে প্রহার করা এবং পৈশাচিকভাবে মাদ্রাসা ছাত্রের হাত কেটে দেয়া হয়েছে। এসব অপকর্মের হোতাদের যথোপযুক্ত বিচার করা হয়নি।
তিনি বিতর্কিত ব্যক্তিদের দিয়ে প্রণীত শিক্ষানীতির সমালোচনা করে অবিলম্বে এটি বাতিল বা সংশোধনের দাবি জানান। এছাড়া ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসীদের বিনা অপরাধে গ্রেফতার, রিমান্ডের নামে নির্যাতনসহ দাড়ি-টুপিধারীদের ধরে অহেতুক জঙ্গি বানানোর চেষ্টা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি, সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যা, ট্রানজিট-করিডোরসহ ভারতের সঙ্গে দেশবিরোধী বিভিন্ন চুক্তির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।